পেশাপ্রবেশঃ অবাকপৃথিবী

আমাদের রোজকার জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে টিকে থাকতে পৃথিবীতে কতভাবেই না মানুষ তার জীবিকা নির্বাহ করে! বেঁচে থাকার তাগিদে কিংবা শুধুমাত্র শখের বশেও মানুষ নানা রকম পেশা বেছে নেন। সে যুগ থেকে এ যুগ, দেশ দুনিয়ার এরকমই কিছু অদ্ভুতুড়ে পেশা সম্পর্কে তথ্য রইল অদ্বিতীয়ায়।

এইসব পেশাগুলো এতটাই অদ্ভুতুরে যে বেশিরভাগের কথা অনেকেরই এর আগে কখনও শোনা হয়নি।

  • রোজ রাতের বেলায় ঘর থেকে বেরোলেই রাস্তায় জ্বলতে থাকা বিদ্যুৎবাতি আমাদের পথ আলো করে রাখে। আর কোনো কারণে লোডশেডিং হলে টর্চ কিংবা স্মার্টফোনের টর্চলাইটের অপশন তো রয়েছেই। তবে বিদ্যুতের এমন সহজলভ্যতা আগেকার জীবনযাত্রায় কিন্তু অতটা সহজ ছিল না। তখন রাতের বেলায় পথ চলতে গেলে অন্ধকার দূর করার কাজ করত যে সমস্ত কম বয়সী ছেলেরা, তাদের বলা হতো লিঙ্ক বয়। হাতে একটি মশাল ধরে তারা পথচারীদের পথকে আলোকিত করে তুলত, এতে তাঁদের জুটত সামান্য কিছু অর্থ। রাস্তায় বিদ্যুৎবাতি আসার আগে ইংল্যান্ডে এ লিঙ্ক বয়দের দেখা মিলত।
  • শত্রুসেনার বিমানের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য এখন রাডারসহ আরো কত কিছু নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়! কিন্তু একটা সময় যখন রাডার বলতে কিছুই ছিল না, অথচ যুদ্ধ ও বিমান দুটিই ছিল, তখন কী করা হতো? তখন সেনারা বিশেষ শব্দ নির্ভর এক যন্ত্র ও আয়না ব্যবহার করতো। যার সাহায্যে দূর থেকে আসা শত্রুপক্ষের বিমানের ইঞ্জিনের আওয়াজ শুনে তারা সেটার অবস্থান নির্ণয় করতে পারতো!
  • ইউরোপে তখন ইঁদুরের উপদ্রব প্রচুর। উপায়ন্তর না পেয়ে তখন rat-catcher বা ইঁদুর ধরার জন্য লোক নিয়োগ করা হয়। এই লোকদের কাজ ছিল ইঁদুর খুঁজে বের করে সেগুলোকে ধরে ফেলা। অদ্ভুতুড়ে পেশা হলেও এই পেশায় নিয়োজিত লোকগুলোর ইঁদুরের কামড় ও তা থেকে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি ছিল বেশি, তবুও তারা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই তাদের দায়িত্ব পালন করতো।
  • আগে যখন ফ্রিজ ছিল না তখন মানুষ খাবার সংরক্ষণ করতো কীভাবে? মানুষ কি বরফ ব্যবহার করতো না? করে থাকলে কীভাবে করতো? উত্তর হচ্ছে সেইসময় একদল লোক নিয়োজিত ছিলেন যারা বরফে জমে যাওয়া হ্রদ কেটে বরফ সংগ্রহ করতেন। এ পেশাটি ছিল খুবই বিপজ্জনক। কিন্তু এই বরফই পরে মানুষের ঘরে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো!
  • আপনার কি প্রতিদিনই সকালে ঘুম ভাঙতে দেরি হয়? এমন কেউ যদি থাকতো যে জাগিয়ে দেবে তাহলে খুব ভালো হত? এমন অদ্ভুতুড়ে পেশা আবার হয় নাকি? হ্যাঁ, এমনটি ছিলো অতীতে। মানুষের বাড়ির জানালা অথবা দরজায় লাঠি দিয়ে টোকা দিয়ে ঘুম ভাঙ্গানোর পেশা ছিল যাঁদের। কোনো একটা সময়ে শহরের মানুষজনদের সঠিক সময়ে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়ার জন্য নিয়োজিত থাকতেন কিছু ব্যক্তি। সেসব ব্যাক্তিরা মানুষের বাড়ির সামনে গিয়ে তাদের বাড়ির জানালা অথবা দরজায় লাঠি দিয়ে টোকা দিয়ে তাদেরকে জাগিয়ে দিতেন!
  • জিমনেশিয়াম বলতে আমরা চিনি ব্যায়ামাগারকে। আর এই জিমনেশিয়ামের সঙ্গেই সম্পর্ক রয়েছে জিমনারসিয়াখের। প্রাচীন গ্রিসে প্রচলিত ছিল এই পেশাটি। রেসলিং, ব্যায়ামাগারে ব্যায়ামের পর কিংবা অন্যান্য খেলাধুলার পর একজন অ্যাথলেটের গায়ে লেগে থাকা ঘাম পরিষ্কার করা, তার শরীর মুছে দেওয়া এবং তেল মাখিয়ে দেওয়াই ছিল এই পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তির প্রধান কাজ। শুনতে কিছুটা অদ্ভুত আর গা ঘিনঘিনে হলেও তখনকার গ্রিসে কিন্তু পেশাটিকে বেশ সম্মানের চোখে দেখা হতো। আবেদনকারীর বয়স হতো ৩০ থেকে ৬০-এর ভেতর। একইসঙ্গে সম্ভ্রান্ত বংশীয় হওয়াও ছিল পেশাটিতে ঢুকতে পারার পূর্বশর্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *